Enter your keyword

বিশ্বের প্রতি প্রন্তরে বাংলার মুখ

Wednesday, October 12, 2016

বাংলাদেশি পাসপোর্টের ক্ষমতা কত, তা জানেন!!!!

বিদেশ যাবার প্রয়োজন না থাকলে সাধারণত আমরা কেউ পাসপোর্ট তৈরি করি না। কিন্তু শুধু কি পাসপোর্ট হলেই বিদেশ যাওয়া যায়? মোটেই না। বরং তার সাথে প্রয়োজন হয় যে দেশে যেতে চান সে দেশের ভিসা তথা প্রবেশানুমোতি পত্র।
কিন্তু কোনো কোনো দেশ আছে যেসব দেশের ভিসা পাওয়া আর সোনার হরিণ পাওয়া প্রায় সমান কথা। সে কারণেই কিছু মানুষ আজ ভিসামুক্ত বিশ্ব গড়ার স্বপ্ন দেখছেন। সেই লক্ষ্যে তাদের শ্লোগান দিন দিন জোরালো হচ্ছে। তাছাড়া ইতোমধ্যে কোনো কোনো দেশ নিজেদের স্বার্থেই নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে হলেও ভিসা ছাড়াই তাদের দেশে অন্য দেশের নাগরিকদের প্রবেশাধিকার দিচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে যেসব দেশ ভিসা ছাড়া তাদের দেশে অন্য দেশের নাগরিকদের প্রবেশাধিকার দিচ্ছে, সেক্ষেত্রে তারা সবার আগে নিশ্চিত হতে চাইছে তাদের নিজেদের নিরাপত্তার কথা। একই সাথে অর্থনৈতিক লাভের বিষয়টিও গুরুত্ব পাচ্ছে তাদের বিবেচনায়।
যাইহোক বর্তমানে যুক্তরাজ্য  যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা তাদের দেশের পাসপোর্টের কল্যাণে সব চেয়ে বেশি সংখ্যক দেশে প্রবেশাধিকার পাচ্ছে। তাই আমরা বলতে পারি বর্তমান বিশ্বে সব চেয়ে ক্ষমতাশালী পাসপোর্ট হচ্ছে সুইজারল্যান্ডের পাসপোর্ট।তবে সীমিত সংখ্যক হলেও বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরাও পাচ্ছেন ভিসা মুক্ত প্রবেশাধিকার বেশ কিছু দেশে। সম্প্রতি সরকার রাশিয়ারসঙ্গে উভয় দেশের কূটনৈতিক অথবা অফিশিয়াল পাসপোর্টধারীদের ভিসামুক্ত ভ্রমণ বিষয়ে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করায় সে সুযোগ আরও সম্প্রসারিত হলো।
তবে আপনি কি জানেন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে ঠিক কতটি দেশে ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারবেন?হ্যাঁ, ভিসা ছাড়াই শুধু বাংলাদেশের পাসপোর্টের জোরে আপনি ৫০টি দেশ ভ্রমণ করতে পারবেন। আর্থিক খাতেরপরামর্শক প্রতিষ্ঠান আরটন ক্যাপিটাল প্রভাবশালী পাসপোর্টের তালিকা তৈরি করেছেযেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ৬৭তম। 
অরটন ক্যাপিটালের নিয়ন্ত্রিত পাসপোর্ট ইনডেস্ক ডটঅর্গ ওয়েবসাইট সূত্রে জানা গেছেবাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা ৫০টি দেশেভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারেন।  দেশগুলোর কয়েকটিতে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের কোনো ভিসার প্রয়োজনই হয় না।বাকি দেশগুলোর প্রায় সবগুলোর ক্ষেত্রেই সেখানে পৌঁছে ‘অন অ্যারাইভাল ভিসা’ করে নিতে হবে। আরদুএকটি দেশের ক্ষেত্রেভিন্ন ব্যবস্থা প্রযোজ্য। 
পাসপোর্ট ইনডেক্স ডটঅর্গে বিভিন্ন দেশের পাসপোর্টের প্রভাব নিয়ে ৮০ পর্যন্ত তালিকা করা হয়েছে,  যেখানে বাংলাদেশের অবস্থান৬৭। কোনো দেশের পাসপোর্টধারী ভিসা ছাড়াই অন্য দেশের যাওয়ার সংখ্যার ভিত্তিতে এই তালিকা করা হয়েছে। বাংলাদেশছাড়াও মাইক্রোনেশিয়া  টোগোর পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়াই ৫০টি দেশে ভ্রমণ করতে পারেন। পাসপোর্টের প্রভাবেরতালিকায় সার্কভুক্ত দেশগুলোর অবস্থান হলোআফগানিস্তান ৭৯ (পূর্বে ভিসা লাগবে না ৩৮ দেশে), ভারত ৫৯ (ভিসাহীন ৫৯),পাকিস্তান ৭১ (ভিসাহীন ৪৬), মালদ্বীপ ৫৩ (ভিসাহীন ৬৫), নেপাল ৭৯ (ভিসাহীন ৩৮), ভুটান ৭৯ (ভিসাহীন ৪০), শ্রীলংকা ৭০(ভিসাহীন ৪৭) 
বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী পাসপোর্ট হলো যুক্তরাজ্য  যুক্তরাষ্ট্রের। তালিকায় এক নম্বরে থাকা দেশ দুটির পাসপোর্ট দিয়ে ভিসাছাড়াই ১৪৭ টি দেশে যাওয়া যায়। আর তালিকার একদম তলানিতে ৮০তম অবস্থানে আছে সাওটম  প্রিন্সিপেফিলিস্তিন,সলোমন আইল্যান্ডমিয়ানমার  দক্ষিণ সুদান। এই দেশগুলোর পাসপোর্টে মাত্র ২৮টি দেশে ভিসা ছাড়া প্রবেশাধিকার আছে। 
বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ৫০টি দেশে ভিসা ছাড়াই প্রবেশের অনুমতির কথা বলা হলেও পার্সপোর্ট ইনডেস্ক ডট অর্গদেশগুলোর তালিকা প্রকাশ করেনি। আর উইকিপিডিয়া  বিভিন্ন দেশের দূতাবাস সূত্রে নিন্মোক্ত ৪৫টি দেশের ব্যাপারে নিশ্চিতহওয়া গেছে। 
বাংলাদেশের পাসপোর্টধারীদের কোনো ভিসাই লাগবে না এমন দেশগুলোহলো

বাহামাস (চার সপ্তাহ পর্যন্ত), বার্বাডোস (ছয় মাস), ডোমিনিকা (ছয় মাস), ফিজি (চার মাস), গাম্বিয়া (তিন মাস),গ্রানাডা (তিন মাস), হাইতি (তিন মাস), জ্যামাইকা,
লেসোথো (তিন মাস), ১০মালাওয়ি (তিন মাস), ১১মাইক্রোনেশিয়া (এক মাস), ১২সেইন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, 
১৩সেইন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড দ্য গ্রানাডিনস (এক মাস), ১৪ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো, ১৫ভানুয়াতু (এক মাস), ১৬মন্টসেরাত(তিন মাস), ১৭টার্ক অ্যান্ড সিসেরো আইল্যান্ড (এক মাস), ১৮ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া আইল্যান্ড (এক মাস), ১৯মাক্রোনেশিয়া(এক মাস)
২০নিউয়ি (এক মাস)
তবে সেখানে পৌঁছে ভিসা করতে হবে এমন দেশগুলো হলো

ভুটান, ২বলিভিয়া (তিন মাসের ভিসা), কেপ ভার্দে, ৪কমোরোস, ৫গিনি বিসাউ (তিন মাস), মাদাগাস্কার (তিনমাস), মালদ্বীপ (এক মাস), মাওরিতানিয়া, ৯মোজাম্বিক (এক মাস), ১০নেপাল (এক মাস), ১১নিকারাগুয়া (তিনমাস), ১২তিমরলেস্টে (এক মাস), ১৩টোগো (সাত দিন), ১৪তুভালু (এক মাস), ১৫উগান্ডা১৬বুরুন্ডি, ১৭জিবুতি (একমাস), ১৮আজারবাইজান (এক মাস), ১৯ম্যাকাউ (এক মাস)
বাংলাদেশের পাসপোর্ট থাকলে ভিসা লাগবে না তবে বিশেষ অনুমোদন লাগবে এমন দেশগুলো হলো :  

কিউবা (টুরিস্ট কার্ড জোগাড় করতে হবেমেয়াদ তিন মাস), সামোয়া (ঢোকার অনুমতিপত্র থাকলেই হলোমেয়াদ দুইমাস), সেচেলেস (ভ্রমণের অনুমতিপত্র থাকতে হবেমেয়াদ এক মাস), সোমালিয়া (ওই দেশে থাকা কেউ স্পন্সর করলে ভিসাপৌঁছেও করা যাবেযার মেয়াদ হবে এক মাস। তবে সোমালিয়া পৌঁছানোর দুদিন আগে সেখানকার বিমানবন্দরে বিষয়টিজানিয়ে রাখতে হবে), শ্রীলংকা (ভ্রমণের জন্য ইলেকট্রনিক অনুমোদনপত্রমেয়াদ এক মাস), লাওস (সরকারি কোনোসফরের নথিপত্র থাকলে ভিসা প্রয়োজন হবে না)
তার মানে হলো বাংলাদেশের পাসপোর্ট হাতে থাকলে আপনি এখন গর্ব করতেই পারেন যে, অন্তত ৪৫ থেকে ৫০টি দেশে প্রবেশের অধিকার আপনার রয়েছে।

No comments:

Post a Comment