Enter your keyword

বিশ্বের প্রতি প্রন্তরে বাংলার মুখ

Thursday, September 29, 2016

পাকিস্তান-রাশিয়ার যৌথ মহড়ায় কূটনৈতিক পরাজয় হয়েছে ভারতের

ইতিহাসে প্রথমবারের মতো যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করেছে পাকিস্তান ও রাশিয়ার সেনাবাহিনী। উরির ঘটনা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যখন যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে ঠিক তখনই ফ্রেন্ডশিপ ২০১৬ নামে পরিচিত এই সামরিক মহড়া শুরু হল।

মহড়ায় ৭০ জন রুশ এবং ১৩০ জন পাকিস্তানী সৈন্য অংশ নিচ্ছে। মহড়া চলাকালীন, রাশিয়ান বাহিনী পাকিস্তানী সৈন্যদের ভিএসএস ভিনটোরেজ নামক স্নাইপার রাইফেল এবং এনআর এস-২ যুদ্ধ ছুরিসহ অস্ত্রসম্ভার প্রদর্শন করে। সোমবার মহড়ার প্রাথমিক আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ফ্রেন্ডশিপ-২০১৬ সামরিক মহড়া ১০ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।

সামরিক বিশ্লেষকদের মত হচ্ছে, এই মহড়ায় পাকিস্তান সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে এবং বিপাকে পড়েছে ভারতের মোদি সরকার। কারণ এটাকে পাকিস্তানের কূটনৈতিক বিজয় হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা।

অন্যদিকে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারতের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সরকার। ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের দৃষ্টিতে এটি ভারতীয় পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতা। এছাড়াও মোদি সরকারের সমালোচনায় সরব হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মহল।

মহড়া শুরুর পর পাকিস্তান সেনাবাহিনী বলেছে, রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া ভালভাবে এগিয়ে চলেছে।

এর আগে গত শুক্রবার রুশ সেনাদের নিয়ে একটি সামরিক পরিবহন বিমান পাকিস্তানের রাওয়াল পিন্ডিতে অবতরণ করে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আইএসপিআরের মহাপরিচালক লে. জেনারেল আসিম বাজওয়া ওইদিন স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টার দিকে টুইটারে রুশ সেনাবাহিনীর অবতরণের ছবি প্রকাশ করেন।

এর পর মঙ্গলবার দুই দেশের ৪০ জন সেনা সদস্য একটি পর্বত প্রশিক্ষণ মহড়ায় অংশ নেয়। তা ছাড়া সাউদার্ন সেনাবাহিনী জেলা পর্বত পদাতিক কারচে ভিত্তিক ব্রিগেড থেকে এ মহড়ার তত্ত্বাবধান করা হয়। পাহাড়ে উঠার সময় নিরাপত্তা বিধানের কৌশল দেখানো হয়।

শীতল যুদ্ধের সময়কার পরস্পর বিরোধী শিবিরের দুই দেশের মধ্যে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এ সামরিক মহড়া এরই মধ্যে সামরিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে গভীর আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। তারা এ সংক্রান্ত বিষয়ে গভীর নজর রাখছেন। এর আগে রুশ সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এই মহড়া ইঙ্গিত দিচ্ছে, দুই দেশের মধ্যে কয়েক দশকের যে ঠান্ডা লড়াই ছিল এবার তা প্রতিরক্ষা-সংক্রান্ত সুসম্পর্কের দিকে এগোচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটার ফলেই নিজেদের পররাষ্ট্র নীতিতে পরিবর্তন এনেছে পাকিস্তান। এয়ারক্রাফট কেনার জন্য এবার অন্য দেশকে বেছে নিচ্ছে পাকিস্তান। এরই মধ্যে রাশিয়া সফর করেছেন পাকিস্তানের আর্মি, বিমান ও এয়ারফোর্সের চিফ। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে এমআই-৩৫ অ্যাটাক হেলিকপ্টার সংক্রান্ত চুক্তির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এছাড়া রাশিয়ার কাছ থেকে এসইউ-৩৫ ফাইটার জেটও কিনতে পারে পাকিস্তান।

বর্তমানে চেরাতে পাক সেনাবাহিনীর স্পেশাল ফোর্সেস ট্রেনিং সেন্টারে মহড়া চলছে। মহড়া ১০ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। সমাপনী অনুষ্ঠানে পাক সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরীফ অংশ নিবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের উরি সেনাঘাঁটিতে দুঃসাহসিক সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে এ মহড়া রাশিয়া বাতিল করে দিয়েছে এবং একে ভারতীয় কূটনীতির বিজয় বলে দাবি করেছিল ভারতীয় কোনো কোনো সংবাদ মাধ্যম। যা পরবর্তীতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।

এদিকে রাশিয়া-পাকিস্তান যৌথ মহড়াকে ভারতীয় পররাষ্ট্র নীতির ব্যর্থতা বলে পরিষ্কার ভাষায় অভিযোগ করেছে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। ভারতের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্থনি বলেন, রাশিয়ার ইতিহাসে এই প্রথম পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া চালাচ্ছে দেশটি। যা ভারতীয় পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতা ছাড়া অন্য কিছু নয়।

No comments:

Post a Comment