Enter your keyword

বিশ্বের প্রতি প্রন্তরে বাংলার মুখ

Wednesday, October 19, 2016

জালাল দিতে চায় মাত্র ২০ পয়সায় বিদ্যুৎ!!!

সরকার কুইক রেন্টাল কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে গড়ে ১২ টাকা ৯৬ পয়সা দামে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কিনে হাজার হাজার কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে ভারত থেকে যে বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে তাতেও ইউনিট প্রতি সাড়ে ৬ টাকা করে পরিশোধ করতে। অর্থাৎ এখানেও ‍বিপুল পরিমাণ অর্থ লোকসান দিতে হবে সরকারকে।

অন্যদিকে রামপালের কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে আমাদের জমি, বেশির ভাগ টাকা আমাদের, সুন্দরবন ধ্বংস হবে আমাদের, পরিবেশ ধ্বংস হবে আমাদের লাভের সমান অংশীদার ভারত। সেখান থেকেও বিদ্যুৎ কিনতে হবে প্রতি ইউনিট ৮.৮৫ টাকা দরে। তাতেও রাজি সরকার, শুধু রাজি নয়, বরং দেশের সচেতন সব মহলের আপত্তি, আন্দোলনকে পায়ে ঠেলে সেটি বাস্তবায়নে উঠে পড়ে লেগেছে। সরকারের যুক্তি হলো, আমাদের বিদ্যুৎ দরকার, সেটি পেলেই হলো।

এখন প্রশ্ন হলো, সরকার বিদ্যুতের জন্য হাজার হাজার কোটি বিনিয়োগ করছে, লোকসান দিচ্ছে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কিনতে পারছে কিন্তু আমাদের নাটোরের জালাল মাত্র প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ মাত্র ২০ পয়সায় দিতে চাচ্ছেন অথচ তার প্রতি কারো দৃষ্টি নেই কেন? 

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় ইউনিট প্রতি মাত্র ২০ পয়সা খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদণ যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন তরুণ উদ্ভাবকজালাল উদ্দিন।  যন্ত্রে পরীক্ষামূলকভাবে ২৫০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনও করেছেন তিনি।

বিদ্যুৎ যন্ত্র আবিষ্কারক জালাল উদ্দিনের বাড়ি উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামে।


এদিকে বর্তমানে অর্থাভাবে সম্ভাবনাময় প্রকল্পটি বন্ধের উপক্রম হয়েছে। প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেলে  যন্ত্র জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎসরবরাহ করতে পারবে।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সাবেক মহাব্যবস্থাপক  বিদ্যুৎ প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বাড়িতে বসানো প্রকল্পটিপরিদর্শন শেষে বলেনএই যন্ত্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন  সঞ্চালন যাচাইবাছাই করে কোনো অসঙ্গতি চোখে পড়েনি।  যন্ত্রের ব্যাপারেআমি পুরোপুরি আশাবাদী।

জালাল উদ্দিন ২০০৫ সালে এমবিএ পাশ করে একটি ব্যাটারি কোম্পানিতে চাকরি নেন। সেসময় কীভাবে কম খরচে বিদ্যুৎউৎপাদন করা যায়  নিয়ে চেষ্টা শুরু করেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় ফ্লাই হুইলইলেকট্রিক্যালরেটিওঅ্যাসেন্ট এন্ডডিসেন্টলেভেলগ্র্যাভিটেশন এন্ড মেকানিক্যালসহ নানা প্রকার বিদ্যুৎ শক্তির সমন্বয় করে একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন যন্ত্র উদ্ভাবনকরেন। যন্ত্রটি তৈরিতে ব্যয় হয়েছে ৫৫ লাখ টাকা।

 বিপুল অঙ্কের টাকার চাহিদা মেটাতে স্থানীয় দুএকজন ব্যবসায়ীকে নিয়ে গঠন করেন জুনাইদ পাওয়ার লিমিটেড কোম্পানি।

তিনি দাবি করেনযন্ত্রটিতে বাইরের যেকোনো শক্তি জ্বালানী হিসাবে প্রথম ১০ মিনিট ব্যবহার করতে হয়। এরপর পূর্ণ চক্রাকার(রিসাইকেলপদ্ধতিতে যন্ত্রটি ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করে বাকি ৬০ শতাংশ সঞ্চালন করে। এটি বায়ু শব্দদূষণ মুক্তবিদ্যুৎ উৎপাদনের আউটপুট . শতাংশ।


জুনাইদ পাওয়ার লিমিটেডের প্রকৌশলী হোসেন আলী বলেনএকটি  মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ যন্ত্র তৈরি করতে খরচপড়ে দেড় মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অথচ  যন্ত্রের দাম  পরিচালনা খরচসহ বিদ্যুতের দাম পড়বে ইউনিট প্রতি মাত্র ২০ পয়সা।গ্যাসডিজেলফার্নেস অয়েলসূর্যালোকপানিপরমাণু বিদ্যুতের যেকোনো একটি ব্যবহার করে ১০ মিনিটে যন্ত্রটিকে সচল করাযায়। এরপর এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করেবাইরে থেকে বাড়তি কোন জ্বালানী খরচ করতে হয় না।

জুনাইদ পাওয়ার লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান মাজেদুল আলম বলেনঅর্থাভাবে প্রকল্পের কাজ স্থবির হয়ে আছে। বিভিন্নব্যাংকে ধর্ণা দিলেও বাণিজ্যিকভাবে চালু না হলে ঋণ দিতে রাজি হচ্ছে না। আর্থিক সহায়তা পেলে দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি মেটাতে প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।


পাঁচবাড়িয়া গ্রামের কলেজ শিক্ষক সাজদার হোসেন বলেনগত সাত বছরে খুচরা  পাইকারি মিলিয়ে মোট ১৩ বার বিদ্যুতেরদাম বেড়ে বর্তমানে ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম গুণতে হচ্ছে  টাকা ৮০ পয়সা থেকে  টাকা ৯৮ পয়সা পর্যন্ত।  যন্ত্রে বিদ্যুৎউৎপাদণ করা সম্ভব হলে আমরা অনেক কম দামে বিদ্যুৎ পাবো

কিন্তু সেদিকে দৃষ্টি দেবার কেউ কি আছেন? কুইক রেন্টাল কিংবা ইন্ডিয়া থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোকসান দিয়ে বিদ্যুৎ কেনার জন্য সরকারকে প্ররোচিত করেন, তারা কি পারেন না আমাদের জালালের প্রকল্পটির পাশে দাঁড়াতে?

No comments:

Post a Comment