Enter your keyword

বিশ্বের প্রতি প্রন্তরে বাংলার মুখ

Friday, October 14, 2016

ঢেউটিন হবে কলাগাছ থেকেই

 কলার ছড়ি কেটে নেওয়ার পর গাছটিকে আর কি কাজে লাগানো যেতে পারে? না তেমন কিছু হয়তো ভাবনায় আসছে না। কেননা, আসলে পরিত্যক্ত কলাগাছ তেমন কোনো কাজেই লাগে না। অথচ এই কলাগাছ থেকেই ঢেউটিনসব অসাধারণ সব জিনিস বানানোর প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন একদল খুদে বিজ্ঞানী।

ঢাকার ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বস্ত্র প্রকৌশল বিভাগের এক দল তরুণ গবেষক ফেলে দেওয়া কলাগাছের আঁশথেকে ঢেউটিনবিকল্প হার্ডবোর্ড  ফলস সিলিং তৈরি করে চমকে দিয়েছেন। শুধু তা নাতাঁদের দাবিএই আঁশ ব্যবহার করেআসবাবও তৈরি করা সম্ভব।

গবেষক দলের সদস্যরা হলেন সাগর দাসমোরাকিবুল ইসলামআশিস সরকারআবু সাঈদমোদিদার হোসেন  মোবেলালহোসেন। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন ইউনিভার্সিটির বস্ত্র প্রকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো.আজহারুল ইসলাম

২০১৪ সালের শেষের দিকের কথা। বন্ধুরা বসে কলা খাচ্ছিলেন।কী নিয়ে গবেষণা করা যায়সে বিষয়েই কথা হচ্ছিল। হঠাৎতাঁদের মাথায় এলপাটের আঁশ দিয়ে যদি এত কিছু বানানো যায়তবে কলাগাছের আঁশ দিয়ে নয় কেনবন্ধুদের মধ্যে অনেকেইহেসেছিল সেদিন। কিন্তু রাকিবুল আর সাগর দাশের মাথায় ঠিকই ঢুকে গিয়েছিল ভাবনাটা। তখন থেকেই চেষ্টার শুরু

গবেষক দলের সদস্যরা জানিয়েছেন, সাধারণ টিনের তুলনায় কলাগাছের আঁশ দিয়ে তৈরি টিন পুরোপুরি বিদ্যুৎ অপরিবাহীতাপপরিবহন ক্ষমতাও বেশ কম। বিদ্যুতায়িত হওয়ার ভয় থাকবে নাসহজে বহন করা যাবে। এই হার্ডবোর্ড পানিতে টিকে থাকবে,ঘুণে ধরার ভয়ও নেই।

আর দামের দিক থেকেও এটি হবে তুলনামূলক সস্তা। প্রচলিত হার্ডবোর্ডগুলোর মূল্য প্রতি বর্গফুট ৯০ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে।সেখানে ল্যাবে তৈরি আমাদের পণ্যের উৎপাদন খরচ ৪৫ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে।

কলাগাছের আঁশ থেকে টাইলসবাথটাববেসিনদরজাজানালাফটোফ্রেমআলমারিকেবিনচেয়ারটেবিলপার্টিশনসহঅনেক আসবাব তৈরিতেই কাজে লাগানো যাবে। জিওটেক্সটাইলের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে বাড়ানো যাবে রাস্তাঘাট,বিভিন্ন বেড়িবাঁধের স্থায়িত্ব। চীনজাপানকোস্টারিকানাইজেরিয়াফিলিপাইন এবং পার্শ্ববর্তী ভারত কলাগাছের আঁশেরগবেষণায় সফলতা পেয়েছে। এই আঁশ থেকে তৈরি হয়েছে পোশাকজানালার পর্দাটেবিল বা ঘর সাজানোর দ্রব্যাদিসহ আরওনানা কিছু

গবেষণা দলের প্রধানসহকারী অধ্যাপক মোআজহারুল ইসলাম বললেন ‘এই আঁশের শক্তি প্রায় পাটের মতো। পরীক্ষা করে দেখাগেছে এর সহন ক্ষমতা প্রায় ৩৬ সেন্টিনিউটন পার টেক্সযেখানে জাতভেদে পাটের সহন ক্ষমতা ২৫ থেকে ৪০ সেন্টিনিউটন পারটেক্স হয়ে থাকে।’ ইতিমধ্যে তাঁদের এই আবিষ্কার ক্যাম্পাসে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বলছিলেন সে কথাও। ‘শিক্ষকশিক্ষার্থীথেকে শুরু করে আমরা সবাই এই আবিষ্কার নিয়ে রোমাঞ্চিত। এখনো অনেক গবেষণা বাকি। আমরা সেসব নিয়ে কাজ করছি।ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মোসবুর খান  ব্যাপারে খুবই আগ্রহী। শুধু তানয়আমাদের ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসে তিনি কলাগাছের আঁশের তৈরি হার্ডবোর্ড ব্যবহারকরবেন বলে সম্মতি দিয়েছেন।

 প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েটঅধ্যাপকজিওটেক্সটাইল বিশেষজ্ঞ আব্দুল জব্বার খান বলেন, ‘ইউরোপেরদেশগুলোতে গ্লাস ফাইবার কম্পোজিটকার্বন ফাইবার কম্পোজিটসহ বিভিন্ন কম্পোজিট শিট প্রস্তুত হচ্ছে। বাংলাদেশে এইগবেষণা যদি সঠিক পথে এগোয়আমার বিশ্বাস আমরা ভালো ফল পাব।

No comments:

Post a Comment