ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শীর্ষ বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং সমন্বিত নিবিড় অংশীদারির সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারত্ব ও সহযোগিতার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। দুই দেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা, জঙ্গিবাদ মোকাবিলা, সমুদ্রসীমা সুরক্ষা ও উন্নয়নের পাশাপাশি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে একে অন্যের পাশে থাকার অঙ্গীকারও করা হয়। বাংলাদেশকে ভালো প্রতিবেশী, ভালো বন্ধু ও ভালো অংশীদার উল্লেখ করে দুই দেশের সম্পর্ককে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায় চীন। এ সম্পর্ক এখন এক নতুন ঐতিহাসিক টার্নিং পয়েন্টে এসে দাঁড়িয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং। হাতে হাত রেখে দুই দেশের উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে পারস্পরিক স্বার্থরক্ষায় একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে ঢাকা ও বেইজং। এর ফলে ঢাকা ও বেইজিং এক নতুন পথে চলার সূচনা করল। দুই নেতা একসঙ্গে কর্ণফুলী টানেলসহ ছয়টি প্রকল্পের ফলক উন্মোচন করেন। কর্ণফুলী নদীর নিচে টানেল নির্মাণ, ছয়টি জাহাজ কেনা ও রাজধানীবাসীর পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন প্রকল্পে ১২৫ কোটি ডলার বা ১০ হাজার কোটি টাকা অর্থায়নের চুক্তি সই করেছে দুই দেশ। এ ছাড়া ২৮টি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে ২২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে রাজি হয়েছে চীন, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ পৌনে দুই লাখ কোটি টাকা। আরো ৯টি ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করেছে দুই দেশের সরকার, স্বাক্ষরিত ১২টি ঋণচুক্তিতে চীনের মোট অর্থায়নের ২৫ বিলিয়ন ডলার বা দুই লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে ।২০১০ সালে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা স্মরণ করে শি চিনপিং বলেন, ‘আমি খুব খুশি, ছয় বছর পর বাংলাদেশের মতো একটা সুন্দর দেশ সফর করতে পেরেছি। চীন ও বাংলাদেশ ভালো প্রতিবেশী, ভালো বন্ধু এবং ভালো অংশীদার। এই সফর সামগ্রিকভাবে দুই দেশের অগ্রযাত্রায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে।চুক্তি সইয়ের আগে শেখ হাসিনার সঙ্গে একান্ত বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে শেখ হাসিনার সঙ্গে উষ্ণ ও ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে দুই নেতা একমত হয়েছে। দুই দেশের সম্পর্ক আরো উচ্চতায় নেওয়ার জন্য সমন্বিত নিবিড় অংশীদারত্ব সহযোগিতা বা সিসিপিসি থেকে কৌশলগত অংশীদারিমূলক সহযোগিতার সম্পর্ক গড়তে একমত হয়েছি। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অবকাঠামো, জ্বালানি, কৃষি ও যোগাযোগ খাতে সহযোগিতা বাড়াতে আমরা কাজ করার আশা প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশের আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়নে চীনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলেও জানানো হয়। সমুদ্র নিরাপত্তা, কাউন্টার টেররিজম ও অর্থনৈতিক করিডর স্থাপনে প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার বিষয়েও দুই দেশ একমত হয়েছে।২০১৭ সালকে বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক বিনিময়ের বছর উল্লেখ করে শি চিনপিং বলেন, ‘চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক একটি নতুন ঐতিহাসিক টার্নিং পয়েন্টে এসে দাঁড়িয়েছে। একে অপরের নিবিড় সহযোগিতার এ সম্পর্ক দুই দেশের উন্নয়নেই ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। সোনার বাংলার স্বপ্ন পূরণে বাংলাদেশের সাফল্য কামনা করেন তিনি।’এক চীন নীতিতেই অটল বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। এক চীন নীতিতে বাংলাদেশের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধান মন্ত্রী । আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে একযোগে কাজ করা এবং একে অন্যকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে আমরা একমত দুইদেশ। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, অবকাঠামো, শিল্প, বিদ্যুৎ-জ্বালানি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং কৃষিসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমরা ঐকমত্যে পৌছেছে চীন ও বাংলাদেশ।বর্তমান সরকারের গতিশীল নেতৃত্বের প্রতি আন্তর্জাতিক মহলের জোড়ালো সমর্থন আবারো প্রমানিত হল চীনের প্রেসিডেন্টের এই সফরের মধ্য দিয়ে।
Saturday, October 15, 2016
নতুন উচ্চতা পেল বাংলাদেশ-চীনের সম্পর্ক
About আরণ্যক শুভ্র
Soratemplates is a blogger resources site is a provider of high quality blogger template with premium looking layout and robust design
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment