Enter your keyword

বিশ্বের প্রতি প্রন্তরে বাংলার মুখ

Monday, September 19, 2016

চা বাগানের দেশে

সিলেট জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। হযরত শাহপরান (র:) এবং হযরত শাহজালাল (রঃ) এর পুণ্যভূমি এই সিলেট। বাংলাদেশের মরমী কবি এবং বাউল সম্রাট হাসন রাজার জন্মস্থানও এটি। স্বাধীনতা যুদ্ধে এ জেলার ভূমিকা অপরিসীম। মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম,এ,জি ওসমানী এ জেলারই কৃতী সন্তান।
চা শিল্পের কারণে বিশ শতকের প্রথম দিকে সিলেট শহরের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেতে থাকে। বাংলাদেশের যে কয়টি অঞ্চলে চা বাগান পরিলক্ষিত হয় তার মধ্যে সিলেট অন্যতম। ১৮৪৯ সালে উপমহাদেশের প্রথম চা বাগানটি প্রতিষ্ঠিত হয় সিলেট শহরে এবং বর্তমানে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ৩টি চা বাগানই এই জেলায় অবস্থিত। তাইতো দেশের চা বাগানের কথা উঠলে সবার আগে চলে আসে সিলেটের নাম। সিলেটের চায়ের রঙ, স্বাদ অতুলনীয় কেননা দেশের উৎকৃষ্ট মানের চা এখানেই উৎপাদিত হয়। সিলেটে প্রবেশের শুরু থেকেই চা বাগানের অপরূপ দৃশ্যগুলি আপনার মন ভরিয়ে দেবে। চারিদিকে সবুজের সমারোহ গোটা সিলেটকেই আচ্ছাদন করে রেখেছে এক ঐস্বর্গীক সমারোহে। এখানে সরকারী ও বেসরকারী তত্ত্বাবধানে দেশের ১৬৩টি চা বাগানের মধ্যে প্রায় ১৩৫টি বাগানই পরিচালিত হয়ে আসছে। চা ছাড়াও আরও একটি কারনে এ অঞ্চল সমৃদ্ধ, এখানকার পাথর, বালির গুণগতমান দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। তাছাড়াও সিলেট জেলার ভুগর্ভে মজুদ প্রাকৃতিক গ্যাস সারা দেশের চাহিদার সিংহভাগই পূরণ করছে।

১৯১২-১৫ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের শাখা সিলেটের সাথে সংযুক্ত হলে দেশের অন্যান্য জেলাগুলির সাথে সিলেটের সংযোগ সাধিত হয়। সিলেটে রয়েছে দেশের দর্শনীয় ও কিছু পর্যটনের বিশেষ স্থান, তাদের মধ্যে- জাফলং, মালনীছড়া চা বাগান, লোভাছড়া চা বাগান, লাক্কাতুরা চা বাগান, ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানা, রাতারগুল, বিছানা কান্দি, শ্রী চৈতন্য দেবের মন্দির, লালা খাল, পান্থুমাই ইত্যাদি অন্যতম।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বৃহত্তর সিলেটের প্রবাসী জনগণের বেশ অবদান রয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সিলেট জেলার বিপুল সংখ্যক লোক অভিবাসন গ্রহণ শুরু করে এবং তাদের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের অর্থনীতিকে যথেষ্ট সমৃদ্ধ করছে। ১৯৫০ ও ১৯৬০ দশকে প্রবাসী সিলেটিদের কল্যানে সিলেটের শহর দ্রুত নগরায়ণ ঘটতে থাকে, বর্তমানেও সেই ধারা অব্যাহত আছে।

No comments:

Post a Comment