মা মা গো মা …
তোমায় বলে বোঝাতে পারবো না কি এক দারুণ যাতনার মাঝ দিয়ে পার করছি এ জীবন ।
তুমি যে আমায় এক গৃহ শিক্ষক দিয়েছিলে যাতে আমি পরীক্ষ।য় ভালো করি … তোমার ইচ্ছাটা আমার মঙ্গলের জন্য , আমার ভালোর জন্য ছিল ।
কিন্তু তুমি তো জান না ওই ইবলিশ আমাকে পড়ার ফাঁকে ফাঁকে ইসলামের বীরত্বের কথা বলত , হজরত আলীর শক্তির কথা বলত , আর আমি মোসলমান বলে আমার খুব ভালো লাগতো । মাঝে মাঝে আমি পড়া বাদ দিয়ে ওই সব ইসলামের ইতিহাস শুনতাম ।
খালেদ বিন অলিদ , ইবনে সিনা তাঁদের কথা শুনতাম আর নিজেকে তাঁদের কাতারে চিন্তা করতাম ।
মা এ যে কি নেশা তুমি বুঝবে না ।
এক সময় আমার খেলাধুলা সব ছেড়ে খালি মনে হত এ জীবনে মহান আল্লাহতালার পথে কিছু করে যাই । কেমন এক নেশায় পেয়ে বসলো । আর আমার ওই গৃহ শিক্ষক আমাকে যার পরনায় উৎসাহ দিতো । এক দিন তোমায় ছেড়ে , সামিয়া কে ছড়ে , সব খেলাধুলা ছেড়ে , আমার প্রিয় মাতৃ ভূমি ছেড়ে ( এখন বুঝি বাংলাদেশ আমার কত প্রিয় ) ওই ব্যাটার , যাকে দেবতার মত বিশ্বাস করতাম , তার সাথে প্লেনে চড়লাম । জীবনে প্রথম প্লেনে চড়ছি শয়ে যে কি আনন্দ তোমায় বলতে পারবোনা ।
মা মা গো …।। এখন সারা রাত শুধু কাঁদি আর কাঁদি । আমায় ইচ্ছা মত বেরোতে দেয় না , কোন ফোন করতে দেয় না , কোন কিছু বললে কি এক ড্রিংক দেয় , আমি সব ভুলে যাই । আমার ওই গৃহ শিক্ষক আমায় রেখে আবার ঢাকা গেছে কোন নতুন ছেলে ধরে আনতে ।
মা জানো আমি তো বাঙালি আমার অনেক প্রশ্ন জাগে মনে । আমি নাকি মরলে বেহেস্ত যাব । সে দিন জানতে চাইলাম যে ইসলামে তো খুন করা বারন , তা হলে আমি বোমা মেরে মানুষ মারলে যে গুনাহ হবে তাহলে সে গুনাহগার কি করে বেহেস্ত যাবে?
বলে কি জানো , ধর্মে যুদ্ধে কোন পাপ নাই , খালি মানুষ খুন কর । আমি বললাম ঠিক আছে , তাহলে ইসলাম তো বলে , নারী ,শিশু , বড়ো মানে বুড় দের খুন না করতে । বলে এ কথা কোথায় পেয়েছ ? বললাম , আবু বকর ( রা ঃ ) কিতাব আল জাহিদ , বই এ।
পড়েছি । বলে কি জানো , নেতার আদেশ পালন করবে শালা বাঙ্গেলি বেশি কথা বলবি তো জানে মেরে ফেলব । আর থেকে থেকে কি সব খাই , সব ভুলে শুধু মনে হয় বিয়ে করি । আর কোথা থেকে কোন সব মেয়ে এসে এই সব আই এস দের খাতির যত্ন করে ।
আর এক দিন আর এক বড়ো নেতাকে বললাম , লা কুম দীন ও কুম .. অয়ালিয়া দীন … ইসলাম তো অন্যের উপর ধর্ম চাপিয়ে দিতে বারন করেছে … ওই লোকটা আমার দিকে এমন এক চাহনি দিল যে আমি চুপসে গেলাম । মা মনে পড়ে তুমি অম্বর চাচার ঘরে যখন পার্টী চলছিল তখন চাচার মেয়ে কে গুলশানে তার রুমে ঘরের চাকর রেপ করে খুন করলো, পার্টীর কারনে চাচারা টের পেল না । তখন তুমি বলে ছিলে এক ছাদের নিচে মেয়ে খুন হচ্ছে আর বাবা বাজনার তালে নাচছে । এখন আমার মনে হয় কেন তুমি আমাকে আরও ভালবাসলে না , তা হলে আমি এই নরকের পথে পা বাড়াতাম না ।
মা মাগো , এরা কেমন এক রুমের মাঝে দশ জন কে শুতে দেয় , জামা কাপড় ধুতে পারি না। স্বাধীনতা বলতে কিচ্ছু নেই …
এক পরম যাতনায় দিন যাচ্ছে ।
এই জীবন থেকে মুক্তি পেতে আর কোন রাস্তা নেই কেবল আত্মহত্যা ছাড়া । তাই আমার অনেক বন্ধু তাড়াতাড়ি বাঁচার জন্য সুসাইড স্কোয়াডে যোগ দিয়ে বেঁচে যায় ।
এখানে একবার এলে মরণ ছাড়া গতি নেই । মা যদি পার তাহলে আমার বাঙালি ভ। ইদের বোল , কেও যাতে এই ভয়ঙ্কর মৃত্যু পথে পা না বাড়ায় । সারা পৃথিবীতে সরিয়া আইন কায়েম করবে , পাগল ছাড়া এ কথা কে ভাবে বোল।
মা মাগো , জীবনের কোন কিছু না বুঝে কি এক দোজখের পথে পা বাড়িয়েছি । জানি না কোন দিন তোমার কাছে আমার এই চুরি করে লেখা ইমেইল পৌঁছাবে কিনা?
মা মা মাগো , তুমি তো জানো , আজ জখন এই মেইল লিখছি তখন আর মাত্র এক দিন পরে আমার বয়স হবে মাত্র ২০ বছর ।
মা বলত এই ২০ বছরে আমি জীবনের কি বুঝি যে আমাকে দিয়ে শরিয়া আইন প্রতিশঠা করবে। তোমরা সবাই ভাবো কেন ২০ বা ২২ বছরের ছেলেদের এরা বেছে নেয় । কারণ কোন নাদান বেকুব ছাড়া কেউ এ পথে আসবেনা ।
মা মা এই মাত্র ২০ বছর বয়সে আমায় তোমায় ছেড়ে , শামীয়া ছেড়ে , পৃথিবী ছেড়ে চলে জেতে হচ্ছে । এ আমার পাপের সাজা।
হয়তো কোন দিন কোন কাগজে, কোন টীভীতে , তোমার ভালোবাসার ধনের মরা মুখ দেখবে।
তুমি ভাববে তোমার ছেলে মরে গেছে , সারা পৃথিবী ভাববে তোমার ছেলে মরে গেছে , পুলিশ ভাববে আমি মরে গেছি, আসলে কি জানো মা , আমি জানবো , আমার মতো শত আই এস ভাই জানবে যে আমি আসলে বেঁচে গেছি আই এস এর হাত থেকে। আই এস এর হাত থেকে বেচে গেছি।
No comments:
Post a Comment