Enter your keyword

বিশ্বের প্রতি প্রন্তরে বাংলার মুখ

Thursday, November 3, 2016

এবার আসছে আরও দ্রুত গতির ইন্টারনেট

By On 4:47:00 AM
দেশে ইন্টারনেটের দুর্বল গতি নিয়ে আমাদের তরুণ উদ্যোক্তা বিশেষ করে অনলাইন কেন্দ্রিক প্রফেশনালদের আক্ষেপ দীর্ঘদিনের। কারণ নেটের স্পিডের দুর্বলতার কারণে অনেক সম্ভাবনাকেই কাজে লাগানো যাচ্ছিল না। ফলে হতাশা ঘিরে ধরেছিল তাদের। তবে তরুণদের সে আক্ষেপ আর থাকছে না। দেশে আসছে দ্রুত গতির নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগের নিশ্চয়তা।

খবরে বলা হয়েছে, দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের মাধ্যমে ১ হাজার ৫শ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ সুবিধাসহ নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট নিয়ে সংযুক্ত হতে যাচ্ছে গোটা দেশ। কক্সবাজারে প্রথম স্থাপিত সাবমেরিন স্টেশনের চেয়ে আটগুণ ক্ষমতাসম্পন্ন হবে বরিশাল বিভাগের অন্তর্গত পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় নির্মাণাধীন এই সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনটি। এটি চালু হলে বরিশাল বিভাগসহ সারা দেশের মানুষ দ্রুতগতির নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা পাবেন। পটুয়াখালীর কুয়াকাটার মাইটভাঙ্গা এলাকায় প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন করে অতিশীঘ্রই চালু করা হবে স্টেশনটি।

সাবমেরিন কেবল টেলিযোগাযোগ বিভাগের আঞ্চলিক প্রকল্প পরিচালক পারভেজ মনন আশরাফ জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অন্তত সাড়ে পাঁচ কোটি। ক্রমেই এই সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে কক্সবাজারে একটি মাত্র সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে দেশে ইন্টারনেট সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু এ সাবমেরিন স্টেশনটির ক্যাবল (তার) লাইন কাটা পড়লে নেটওয়ার্ক সরবরাহের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় গ্রাহকরা প্রায়ই চরম দুর্ভোগের শিকার হন। পটুয়াখালীর ল্যান্ডিং স্টেশনটি চালু হলে গ্রাহকদের আর এ দুর্ভোগে পড়তে হবে না। এটি চালু হলে গ্রাহকরা খুব সহজেই দ্রুত গতিসম্পন্ন নিরবচ্ছিন্ন নেটওয়ার্কে ইন্টারনেট সুবিধা পাবেন।

কুয়াকাটার লতাচাপলি ইউনিয়নের আমখোলা গ্রামে ২০১৩ সালের শেষের দিকে প্রায় ১০ একর জমির ওপর ৬৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের কাজ শুরু হয়। বর্তমানে প্রকল্পটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ইতোমধ্যে সাগরের তলদেশ দিয়ে ফ্রান্স থেকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমার হয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত ২৫ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ ক্যাবল লাইনের সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। ইউরোপ থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে আসা সঞ্চালন লাইন সংযুক্তির জন্য ল্যান্ডিং স্টেশন স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কুয়াকাটার স্টেশন থেকে মাত্র সাড়ে ৯ কিলোমিটার দূরত্বে উপকূলের কাছাকাছি বঙ্গোপসাগরে আসা লাইনটির সংযোগ স্থাপনের কাজ শেষ করেই চালু করা হবে দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন স্টেশনটি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের নভেম্বর মাসে সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনটি চালু করার সিদ্ধান্ত নিলেও ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমদিকে এটি চালু করা হতে পারে। কারণ বর্ষা মৌসুমে কেবল সংযোগের চূড়ান্ত কাজ শুরু করার পর বৈরী আবহাওয়ার কারণে তা বন্ধ রাখা হয়। বাকি কাজ নভেম্বরের শেষ নাগাদ সম্পন্ন করা হবে।

প্রকল্পটি চালু হলে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে তথ্য প্রযুক্তির উন্নতি সাধনের পাশাপাশি টেলিযোগাযোগ খাতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে। সেই সঙ্গে এ খাত থেকে অতিরিক্ত রাজস্ব্ব আদায়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

২০২০ সাল নাগাদ বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ বন্যপ্রাণী হারিয়ে যাবে

By On 4:45:00 AM
পরিবেশবাদী সংগঠন ওয়ার্ল্ড জিওলজিক্যাল সোসাইটি অব লন্ডন এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ডের এক যৌথ গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, বিশ্বে গত সাড়ে চার দশকে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা ৫৮ শতাংশ কমেছে প্রতিবছর কমার পরিমাণ  শতাংশ হারে কমতেথাকলে ২০২০ সাল নাগাদ বিশ্বের দুইতৃতীয়াংশ বন্যপ্রাণী হারিয়ে যাবে।

তিন হাজার ৭০০ ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির পাখিমাছস্তন্যপায়ী প্রাণীউভচর  সরীসৃপের তথ্য বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছে, ১৯৭০সালের পর থেকে বিশ্বে ৫৮ শতাংশ বন্যপ্রাণী হারিয়ে গেছে এর মধ্যে নদনদীহ্রদ  জলাভূমিতে থাকা জীবজন্তুই বেশিপরিমাণে নিশ্চিহ্ন হয়েছে  জন্য গবেষকরা মানবিক তত্পরতা বৃদ্ধিআবাসস্থল ধ্বংসবন্যপ্রাণী ব্যবসাদূষণ  জলবায়ুপরিবর্তনের মতো কারণগুলোকে দায়ী করেছেন

তাছাড়া, পৃথিবীতে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ যে হারে বাড়ছে তার প্রভাবেও পশুদের পক্ষে সুস্থভাবে বেঁচে থাকাটা দায় হয়ে উঠেছে। মাত্র পঞ্চাশ বছরের মধ্যেই পৃথিবী থেকে ৪১ শতাংশ মানবেতর স্তন্যপায়ী, ৭ শতাংশ পাখি, ৪৬ শতাংশ সরীসৃপ, ৫৭ শতাংশ উভচর এবং ৭০ শতাংশ জলজ প্রাণী, বিশেষ করে মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, একই সময়ের মধ্যে বনাঞ্চলের পরিমাণও অনেক কমেছে। আগে যেখানে পৃথিবীর ৩৩ শতাংশ ভূখণ্ডে ছিল বনভূমি, এখন তা কমে দাড়িয়েছে ২৩ শতাংশে। জীবজন্তু বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার এটিও অন্যতম প্রধান কারণ।

তাছাড়া, বন্যপ্রাণী বিশেষ করে হরিণবাঘসিংহহাতিসহ অন্যান্য প্রাণীর চামড়াদাঁতশিং ইত্যাদি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের চাহিদাথাকায় বিশ্বব্যাপী এর বাণিজ্যে প্রসার ঘটেছে অবৈধ পাচার  বেআইনি শিকারের ক্রমবর্ধমান তৎপরতার ফলে দ্রুত হারে হ্রাসপাচ্ছে এসব মূল্যবান প্রাণীর সংখ্যা বিপন্ন হচ্ছে এদের অস্তিত্ব

যেসব দেশ থেকে দ্রুত হারে বন্যপ্রাণী হ্রাস পাচ্ছে বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি এক সময় ঢাকার বন এলাকায় ছিল বন্যহাতিরআনাগোনা ঢাকার বনেও ছিল বাঘসহ নানা জাতীয় প্রাণী আজ তা ইতিহাসের অংশ হয়ে পড়েছে বনাঞ্চলের পরিমাণ হ্রাসপাওয়ায় বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য বন্যপ্রাণী উধাও হয়ে গেছে দেশের নদনদী থেকেও উধাও হতে চলেছে মিঠা পানির কুমির,ডলফিনসহ নানা প্রাণী স্থলভাগে কাণ্ডজ্ঞানহীনভাবে বন্যপ্রাণী হত্যার ঘটনা যেমন শূন্যতার সৃষ্টি করেছে তেমনি নদী দূষণেরকারণে অনেক জলজ প্রাণী অস্তিত্ব হারাতে চলেছে  অথচ, বন  বন্যপ্রাণী পরিবেশ  প্রতিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং মানুষেরঅস্তিত্বের জন্য অপরিহার্য

তাই আসুন, বন্য প্রাণীদের পাশে দাঁড়াই। কেননা, আমাদের দেশের জীববৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে হলে বন ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণে এখনই সচেতন হতে হবে। তা না হলে বন ও বন্য প্রাণী বিপন্ন হওয়ার পাশাপাশি বিন্ন হবো আমরা মানুষরাও।

Saturday, October 29, 2016

ভাড়া নেয় সিটিং, যাত্রী টানে লোকাল

By On 4:11:00 AM
কোথায় যেন পড়েছিলাম, নগরপরিবহণগুলোর মধ্যে সরকারি খাতায় নাকি সিটিং এবং লোকাল বাস বলে আলাদা কোনো প্রকারভেদ নাই। সবই এক। ঘটনা সত্য কিনা জানি না। তবে যখন রাস্তার মোড়ে মেজিস্ট্র্যাট সাহেবরা আদালত বসিয়ে চেক করা শুরু করেন, তখন দেখা যায় দূরত্বভেদে ভাড়ার যে চার্ট ড্রাইভারের মাথার উপর ঝুলানো থাকে তা সব বাসে প্রায় একই রকম। তাতেই ধারণা করি, আসলে সব বাসের নিয়ম-কানুন একই হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবতা হলো কোনটা গেটলক, কোনটা সিটিং, কোনটা কম-স্টপিজ, কোনটা আবার বিরতিহীন!

আরও চকমপ্রদ বিষয় হলো- কোনো বাসের গায়েই কিন্তু ‘লোকাল পরিবহন’ বলে কিছু লেখা থাকে না। লেখা না থাকলেও সমস্যা নেই, আমরা নিজ দায়িত্বেই ধারণা করে নেই যে অমুক বাসটা হয়তো লোকাল, আর তমুক বাসটা লোকাল না হলেও সিটিং ভাড়া দিয়ে যে কোনো স্থান থেকেই উঠা কিংবা নামা যাবে। আর ১/২টা ব্যতিক্রম ছাড়া সব বাসেই ইচ্ছে মতো লোক দাঁড়িয়েই যাওয়া যাবে।

আমরা যারা নিজেদের আম-জনতা তথা ম্যাঙ্গো-পাবলিক মনে করি অর্থাৎ যাদের একখান প্রাইভেটকার কিংবা প্রাইভেট কোনো পরিবহন নাই তারা প্রতিদিন ঝুলতে ঝুলতে সেসব গাড়িতেই যাতায়াত করি, আর সিটিং ভাড়া দিয়েও মনকে সান্ত্বনা দেই, তারপরও তো গন্তব্য পৌঁছতে পারা গেল, সেটাই-বা কম কি।

কিন্তু গতকাল ফেসবুকে একটা ইভেন্ট দেখে ভাবলাম ঘটনাটা একটু ঘেঁটে দেখি। ‘মিরপুর রোডে নামে সিটিং, ভাড়ায় চিটিং! যেখানেই নামেন ভাড়া কিন্তু ২৫/৩০!’ শিরোনামে একটি ইভেন্ট খুলেছে কিছু ইয়ংম্যান। ইভেন্টের ব্যাখ্যায় তারা যা লিখেছে তার মর্মার্থ হলো,

এই নৈরাজ্য আর কতদিন
সিটিং সার্ভিসের নামে চলছে ‘চিটিং সার্ভিস 
সিটিং সার্ভিস” লিখে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। 
সিটিং সার্ভিসে কাউন্টার ব্যতীত না থামা  সিটের অতিরিক্ত যাত্রী না উঠানোর নিয়ম থাকলেও তার কোনটিই মানে না ‘চিটিংসার্ভিসগুলো। 
নগরবাসীর বহুমুখী দুর্ভোগের সাথে নতুন  প্রতারণা যুক্ত হলেও দেখার কেউ নেই।

রাজধানীর কুড়িলনতুনবাজার হয়ে মিরপুর থেকে আনসার ক্যাম্প পর্যন্ত বেশ কিছু বাস সিটিং সার্ভিস হিসেবে চালাচ্ছে। এইরুটে সিটিং সার্ভিসের কথা বলে সর্বনিম্ন ভাড়া নেয়া হয় ২৫ টাকা। 

তবে ভাড়ার বিপরীতে যাত্রীদের কোন টিকেট দেয়া হয় না। সিটিং সার্ভিসে সিটের অতিরিক্ত যাত্রী না উঠানোর নিয়ম থাকলেওবাসগুলোতে যাত্রী উঠানো হয় ঠেসে ঠেসে

গেটলক এসব পরিবহনে যেখানেই যাত্রী নামুক না কেন তাকে দিতে হচ্ছে সর্বশেষ গন্তব্যের ভাড়া।এবং এসব গাড়িতে শিক্ষার্থীদেরজন্য অর্ধেক ভাড়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। 
(যদিও মাননীয় যোগাযোগ মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের ভাড়া হাফ করে দিয়েছেন


(বিঃদ্রঃইহাই বাংলাদেশের একমাত্র রোডযেখানে কোন লোকাল বাস নাই…!!) 

তাই এই নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীযোগাযোগ মন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রী এর হস্তক্ষেপ কামনার জন্য আমাদের এইEvent..!!

কয়েক ঘন্টা পর্যবেক্ষণের পর দেখলাম ইভেন্টটিতে ব্যাপক সাড়া পড়ে গেছে। ভুক্তভোগী লোকজন তাদের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। দুই/একজনকে আবার দেখলাম, তারা বাস মালিক পক্ষ নিয়ে এসে ভাড়া বেশি নেওয়ার পেছনের অদৃশ্য কারণগুলো ইনিয়ে-বিনিয়ে বলার চেষ্টা করছে। আশা করি সেসব কতটা সত্য তা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, বিআরটিএ এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের লোকজন ভেবে দেখবেন।

তবে আমাদের বক্তব্য হলো, ‘ভাড়া নেয় সিটিং, যাত্রী টানে লোকাল’ এই সমস্যা শুধু ঢাকার মিরপুর রোডের সমস্যা নয়, রাজধানীর অন্য সকল রাস্তাসহ দেশের অন্যান্য শহরের পরিবহনগুলোর ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য। অতএব, কর্তৃপক্ষ বলে যদি কিছু থাকে তারা এ ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

কক্সবাজারের মেয়ে নাসিমা এখন আন্তর্জাতিক আইকন

By On 4:08:00 AM
কক্সবাজারের মেয়ে নাসিমা এখন আন্তর্জাতিক আইকন। কিন্তু কিভাবে? খবরে জানা গেছে, গুপী বাঘা এবং জাপানের টেলিকমস্টাফের যৌথ প্রযোজনায় বাংলাদেশের প্রথম নারী সার্ফার নাসিমা সার্ফিংজীবন  কক্সবাজারের সার্ফিং নিয়ে নির্মিতডকুমেন্টারি সিনেমা নাসিমা প্রথম প্রদর্শনী হতে যাচ্ছে জাপানের টোকিও শহরে। ছবিটি দেখানো হবে বিশ্বের অন্যতমমর্যাদাপূর্ণ ডকুমেন্টারি ফেস্টিভ্যাল টোকিও ডকস এ।
এই ছবিটি একত্রে যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন গুপীবাঘা প্রোডাকশন্স লিমিটেড এর কর্ণধার আরিফুর রহমানবিজন জুটি।

বাংলাদেশে সার্ফিং খেলায় নারীদের পথিকৃত নাসিমা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দৃষ্টি কেড়েছিলেন আরও আগেই। চার/পাঁচ বছরআগে মার্কিন সাংবাদিক জয়মাল ইয়োগিসের এক প্রতিবেদনে প্রথম উঠে আসে নাসিমার গল্প। এরপর তার গল্পে অনুপ্রাণিত হনক্যালিফোর্নিয়ার প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা হিথার কেসিঞ্জার। সিদ্ধান্ত নেন নাসিমার গল্প তুলে ধরবেন তার প্রামাণ্যচিত্রে। নাসিমাকেনিয়ে তৈরি প্রামাণ্যচিত্রটির নাম রাখা হয়েছে দ্য মোস্ট ফিয়ারলেস এর পর মোস্টফিয়ারলেস নাসিমাকে নিয়ে প্রতিবেদনএসেছে বৃটেনের সানডে টাইমসঅস্ট্রেলিয়ার দ্য অস্ট্রেলিয়ানেসহ আন্তর্জাতিক অনেক গণমাধ্যমে। কিন্তু আমাদের নাসিমাকে নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের আগ্রহের কারণ কী?

সার্ফিং বাংলাদেশে খেলা হিসেবে একেবারেই নতুনমূলত বিদেশী পর্যটকদের সার্ফিং দেখে দেখে সার্ফিং শুরু করেন জাফর আলম।তাকে দেখে অনুপ্রাণিত নাসিমা সার্ফিং  আসেন এবং পর পর চারবারের জাতীয় সার্ফিং চ্যাম্পিয়ান হন ছেলেমেয়ে উভয়েরমধ্যে। যখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে নাসিমার নাম ছড়িয়ে পড়ছিল সারা বিশ্বেঠিক তখনি সার্ফিং ছেড়ে দিতে বাধ্য হন নাসিমা।

কিন্তু সার্ফিং ছাড়া তার জীবন অর্থহীন হয়ে যায়। শুরু হয় নাসিমার সার্ফিং  ফেরার লড়াইদু বছর পর আবারপ্রতিযোগিতায় নাম লেখান নাসিমা।  বছর বয়সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল কক্সবাজারের মেয়ে নাসিমাআক্তার। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে ১৮ বছরের এই কিশোরী এখন নিজের জগৎ খুঁজে নিয়েছেন সার্ফিং খেলায়। সার্ফিংয়ের প্রতিঅদম্য ভালবাসা তার। আর  ক্ষেত্রে তাকে মোকাবিলা করতে হয়েছে নানা সামাজিক রক্ষণশীলতা  প্রতিবন্ধকতা। কিন্তু কোনকিছু দমিয়ে রাখতে পারেনি তাকে।

বাংলাদেশের অনেক মানুষের কাছেই সার্ফিং নামের খেলাটা অপরিচিত। তবে সমুদ্র উপকূলে বেড়ে ওঠা নাসিমার কাছে এই খেলানেশার মতো।পানিতে নামার জন্য নানা কটূক্তি শুনতে হয়েছে তাকে। কিন্তু সার্ফিংয়ের প্রতি অদম্য আগ্রহ এগিয়ে নিয়ে গেছেতাকে। হিথার কেসিঞ্জার এবং আরিফুর রহমানবিজন জুটির প্রামাণ্যচিত্রে তুলে ধরা হয়েছে নাসিমার সেই লড়াই।

Friday, October 28, 2016

রাজধানীকে যানজটমুক্ত করতে টাকা লাগবে না, পরিকল্পনাই যথেষ্ট

By On 3:40:00 AM
রাজধানীর মতিঝিল থেকে মিরপুর দশ নম্বর গোল চক্করের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার।ছুটির দিনে যদি রাস্তা ফাঁকা থাকে তাহলে গণপরিবহনে এ রাস্তাটুকু ৩৫ থেকে ৪০ মিনিটে পাড়ি দেওয়া যায়। কিন্তু এ ৪০ মিনিটের রাস্তাই যদি আপনাকে আড়াই ঘণ্টায় পাড়ি দিতে হয় তাহলে কেমন লাগবে?

মতিঝিল থেকে শাহবাগের দূরত্ব সাড়ে তিন বা চার কিলোমিটার। আর এই রাস্তাটুকু যদি আপনাকে এক ঘণ্টা ২০ মিনিট থেকে দেড় ঘণ্টায় পাড়ি দিতে হয় তাহলে আপনার ভাবনাটা কেমন হবে? কিংবা মৎস্যভবন মোড় থেকে এক কিলোমিটার দূরত্বে থাকা শাহবাগ মোড় পার হতে যদি আপনাকে ট্রাফিকের ১৮টি সিগন্যাল অপেক্ষা করতে হয়, তাহলে সেই সময় গাড়িতে বসে বসে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি সম্পর্কে আপনার ভাবনাগুলো কেমন হতে পারে? অথচ, প্রায় প্রতিটা দিন মতিঝিল থেকে অফিস ফেরৎ ক্লান্ত-শ্রান্ত হাজার হাজার মানুষকে এই ভয়ানক দুর্ভোগ পোহাতে পোহাতে ঘরে ফিরতে হচ্ছে।

শুধু এই রাস্তার কথাই বলি কেন, শাহবাগ থেকে সাইন্সল্যাব হয়ে ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, গাবতলী কিংবা সায়দাবাদ থেকে মালিবাগ হয়ে রামপুরা, বসুন্ধরা, উত্তরা অথবা সদরঘাট থেকে যেকোন দিকের যানবাহনেই আপনি চড়ে বসেন না কেন, একই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে করতেই আপনাকে গন্তব্যে পৌঁছতে হবে। অর্থাৎ দিনের এক তৃতীয়াংশ বা অর্ধেকই আপনাকে রাস্তায় কাটিয়ে দিতে হচ্ছে।

এতে ফল কি দাঁড়াচ্ছে? মানুষের লক্ষ লক্ষ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। প্রতিদিন অসহনীয় যানজট মোকাবেলা করতে করতে মানুষের জীবনী শক্তি ক্ষয় হচ্ছে, রাস্তার তীব্র শব্দের মধ্যে থাকতে থাকতে শ্রবণশক্তি হারাচ্ছে, গাড়িতে বসে থাকতে থাকতে মেরুদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সর্বোপরি কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে। ফলে দেশের সামগ্রিক উৎপাদন কমে যাচ্ছে।

নানা সময়ে প্রকাশিত গবেষণা তথ্যমতে, প্রতিদিন প্রায়  দশমিক ১৬ মিলিয়ন কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে শুধু যানজটের কারণে আরএর মধ্যে  দশমিক ২০ মিলিয়ন ঘণ্টা অর্থাৎ ৪০ শতাংশ নষ্ট হচ্ছে ব্যবসায়িক কর্মঘণ্টা ফলে যানজটের কারণে প্রতি বছরদেশের ২০ হাজার কোটি টাকা মূল্যের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এর মধ্যে শুধু কর্মঘণ্টা নষ্টের জন্য বছরে ক্ষতি হচ্ছে ১২ হাজার কোটিটাকাপরিবহন ব্যবসায় ক্ষতি  হাজার কোটি টাকাজ্বালানি অপচয় ৫৭৫ কোটি টাকাদুর্ঘটনাজনিত খরচ ৫০ কোটি টাকাএবং পরিবেশের ক্ষতি দুই হাজার ২০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ গোটা দেশের অগ্রগতিকেই খামচি দিয়ে আটকে রেখেছে এ যানজট।

সরকার হয়তো বলবে, যানজট নিরসনের জন্যই তো বিভিন্ন স্থানে ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হচ্ছে, মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে, রাস্তা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদি। হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে, এসব বাস্তবায়ন হলেই যানজট কমে যাবে। হ্যাঁ, এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে যানজট কমবে এটা আমরাও মানছি। কিন্তু এটাও সত্য যে, সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে যত বড় বড় প্রকল্পই বাস্তবায়ন হোক না কেন তাতে যানজট মুক্ত হবে না রাজধানী শহর।

অথচ, এমন একটি উপায় আছে যার মাধ্যমে কোনো টাকা-পয়সা খরচ করা ছাড়াই রাজধানীকে পুরোপুরি না হলেও প্রায় যানজট মুক্ত করে ফেলা সম্ভব। উপায়টি হচ্ছে প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ। আপনি যদি ব্যস্ত সময়গুলোতে লক্ষ করেন, তাহলে দেখবেন রাস্তায় ১০টি গণপরিবহন থাকলে ১০০টি থাকে প্রাইভেট কার। আর এগুলোর প্রায় সবকটির ভেতর যাত্রী হিসেবে দেখবেন বড়জোর একজন বসে আছেন! কোনো কোনো গাড়িতে হয়তো চালকই আছেন, আর কেউ নেই। ২টা প্রাইভেট কার একটি বাসের জায়গা দখল করে আছে, অথচ ৩০টা প্রাইভেট কার মিলেও একটা বাসের সমান যাত্রী বহন করতে পারবে না। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমাদের সীমিত রাস্তাকে কেন এ বিলাসী বাহন দিয়ে আটকে রাখছি? অতএব, রাজধানীকে যানজটমুক্ত করতে হলে প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে।

বিআরটিএ ২০১৫ সালের জুন মাসের হিসাব অনুযায়ীরাজধানীতে মোট নিবন্ধিত বাস রয়েছে ২২ হাজার ৮১৪টি। অন্যদিকেপ্রাইভেটকারের সংখ্যা  লাখ ১৩ হাজার ৪৮৯টি।

কিন্তু চাইলেই তো আর রাস্তা থেকে প্রাইভেট কার তুলে দেওয়া যাবে না। তাই সিঙ্গাপুরের মতো পদক্ষেপ নিতে হবে। ছুটির দিনে যেকোন রাস্তায় প্রাইভেট কারগুলোর চলাচল উন্মুক্ত থাকলেও অফিস-ডেগুলোতে সকল রাস্তায় অবাদে প্রাইভেট কার চলাচল করতে দেওয়া যাবে না।তবে হ্যাঁ, কারো যদি যেতেই হয় তাহলে তাকে উচ্চ হারে ফি দিয়ে অফিস-ডেতে চলাচলের জন্য আলাদা লাইসেন্স নেওয়ার বিধান করতে হবে।তাহলে দেখা যাবে অতিরিক্ত লাইসেন্স ফি’র ভয়ে অনেকেই অফিস-ডেতে গাড়ি বের করবেন না। আর করলেও সরকারের কোষাগারে জমা পড়বে অতিরিক্ত অর্থ, যা দিয়ে গণপরিবহনকে উন্নত করলেই অভিজাতরাও তাতে চলাচল করতে স্বাচ্ছন্দ অনুভব করবেন।ফলে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের দিকে তাকিয়ে না থেকে আমাদের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী একটু এ বিষয়টার দিকে একটু নজর দিবেন কি?