সাবধান! বাংলাদেশ! আসছে ৯.০ মাত্রার ভূমিকম্প!
বাংলাদেশের নীচে দুটি টেকটোনিক প্লেট পরস্পরের দিকে একটু একটু করে এগিয়ে আসছে। সাধারনত এধরনের ভূমিকম্প আমরা সমুদ্রের অভ্যন্তরেই দেখে এসেছি। কিন্তু ভূমিতে এটাই প্রথম আর তাই বিজ্ঞানীদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। এর আগে একই ধরনের ভূমিকম্প হয়েছিল সমুদ্রে যা সৃষ্টি করেছিল সুনামি। এতে মারা গিয়েছিল ২,৩০,০০০ মানুষ (২০০৪) আর ২০১১ সালে হয়েছিল জাপানে যেখানে মারা গিয়েছিল ২০,০০০ মানুষ। এ সবই হয়েছে সমুদ্রে। কিন্তু এবার এই আশংকা দেখা দিয়েছে সরাসরি ভূখন্ডে যে কারনে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা দেখা দিয়েছে। যখনই কম্পন শুরু হবে প্লেট মুভমেন্টের কারনে, তখন সেই ভূমিকম্পের মাত্রা হবে নূন্যতম ৮.২ থেকে ৯.০ পর্যন্ত। আর ঢাকা চট্টগ্রামের মত ঘনবসতি পূর্ন এলাকায় এধরনের ভূমিকম্পের ভয়াবহতা মারাতম বিপর্যয় টেনে আনবে – এব্যাপারে বিজ্ঞানীরা প্রায় নিশ্চিত। একটি রিখটার স্কেলের সর্বোচ্চ মাত্রা থাকে ১০। আর সর্বনিম্ন থাকে ১। ১.০ থেকে ২.০ শুন্যের তীব্রতা ১০ গুন বেশী। প্ররথাত প্রতিটি স্কেলের মাত্রা বাড়ার সাথে সাথে তার তীব্রতা বাড়ে পূর্বের স্কেলের ১০গুন।>প্রকাশ ঝা নামক একজন বিজ্ঞানী বলেছেন, ৯.০ রিখটার স্কেলের একটি ভূমিকম্প ২৫,০০০ নিউক্লিয়ার বোমার সমপরিমান শক্তিশালী। যেখানে হবে তার ১০০ কিমি বা তারও বেশী রেডিয়াসের মধ্যে সবকিছুই প্রায় ধব্বংসের কাছাকাছি পর্যায়ে নিয়ে যাবে। এর আগে এই মাত্রার ভূমিকম্প সমুদ্রে হয়েছিল, ভূখন্ডে নয়। সমুদ্রে হলে সুনামি হয়, কিন্তু ভূ-খন্ডে ঠিক কিভাবে ক্ষয়ক্ষতি হবে এ ব্যাপারে পৃথিবী এখনও অনভিজ্ঞ। ভূমিকম্পের ইফেক্টটা অনেকটা একটা পুকুরে পাথর ছুড়ে মারার পর যে রিপল ইফেক্ট হয় তার মত। অর্থাৎ ভূমিকম্পের তীব্রতা যত বেশী হবে এই রিপল ইফেক্ট তত বেশী জায়গা নিয়ে আরো বেশী স্থান ধ্বংস করবে। ভূমিকম্পের মাত্রার উপর ডিপেন্ড করে ভূমিকম্পটি কতক্ষন ধরে হবে আর ভূমিকম্প কতক্ষন ধরে হবে তার উপর নির্ভর করবে ভূমিকম্পটি কতদূর পর্যন্ত ক্ষতি করবে। মাত্রা যত বেশী, স্থায়িত্ব তত বেশী।
এখন প্রশ্ন হলো আমরা কতটুকু প্রস্তুত? আমার মতে “মোটেই না”। এই ভূমিকম্প এখন হবে নাকি আগামী ৫০০ বছরের মধ্যে হবে সেটা আমরা কেউ জানিনা। এমনকি এই আর্টিকেল লিখতে লিখতেও হয়ে যেতে পারে। কিন্তু তার মানে এই না যে আমরা হাত গুটিয়ে বসে থাকব। যদি বাচতে চায়, তাহলে অনেক কিছু ঠিক করার আছে। তবে মনে হয় সবার আগে দরকার হবে বিশাল বিশাল সব নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রের। কারন রাতারাতি যেমন পুরো শহরকে মেরামত করে সব পরিকল্পিত করে বিল্ডিং এর নীচে স্প্রিং লাগানো যাবে না তেমনি আইন মেনে বাড়ি বানানোতে খুব কম মানুষকে বাধ্য করা যাবে আমাদের মত দেশে যেখানে টেবিলের নীচে টাকা দিলে যেকোন বিল পাস হয়ে যায়, যেকোন বিল্ডিং প্ল্যান পাশ হয়ে যায়। আর দেশের মানুষকে হাজার বোঝালেও কজনে বুঝতে চায়। আসলে বুঝে সবাই, কিন্তু বুঝেও না বুঝার ভান করে অথবা যে জিনিষ দেখিনি সেটিকে পাত্তা না দিলেও চলে টাইপের একটা ভাব তো বরাবরই আমাদের আছে। তাই অন্তত আমাদের দেশে মানুষকে বুঝিয়ে মনে হয় না কোন লাভ আছে। যদি সরকার চায় এনফোর্স করতে তাহলে হয়তো কিছু একটা হবে। রীতিমত বাধ্য করতে পারলে তাহলে হয়তো ঠিক হবে। তাও অনেক সময়ের প্রয়োজন। তাই, এখন বড় বড় বিশাল সব নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলা উচিত বাংলাদেশে যেগুলো ভূমিকম্প সহনশীল হবে আর বিপদে পড়া মানুষগুলো সেখানে আশ্রয় পাবে। আর যদি একবার ভূমিকম্প হয়, তাহলে হয়তো নিরাপদে যাওয়ার আগে অনেক মানুষ ফেসবুক স্ট্যাটাস দিতে দিতেই ভিক্টিম হয়ে যাবে। এটা আবার আমাদের হালনাগাদ ফ্যাশন।
তবে নাগরিক মতামত খুব গুরুত্বপূর্ন । এখন পর্যন্ত দেখলাম না এ ব্যাপারে কোন নিরাপত্তা মূলক কোন স্টেপ নিতে আর সত্যি কথা বলতে এই ব্যাপারে সবাই অনেক অনভিজ্ঞ। আপনাদের মতামত কি? কি ধরনের স্টেপ নেয়া উচিত ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা হলেও কমানোর জন্য। লংটার্ম এবং শর্টটার্ম – ২ ক্ষেত্রেই বলুন। কারন ভূমিকম্পটি কালও হতে পারে আবার ১০০ বছর পরও হতে পারে – কিন্তু হবেই। তাই এগুলো নিয়ে ভাবার সময় হয়েছে। ভূমিকম্পে পড়ব বলে অন্যকোন দেশ আমাদের আশ্রয় দিবে না। নিজেদেরটা নিজেদের করে নিতে হবে। তাই আপনাদের অপিনিয়ন গুলো জরুরী। কারন জান বাচানো ফরজ কাজ। নিরাপদে থাকুন।
No comments:
Post a Comment